Monday, July 30, 2012

বন্ধুরা সহজেই জেনে নিই MLM ব্যবসার লুকোনো রহস্য উন্মোচিত!!




বর্তমানে MLM ব্যবসার প্রতারনার কথা সবাই কমবেশি জেনেছেন। যারা এখনও জানতে পারেন নি তাঁরা নিচের এই লিঙ্কগুলো থেকে বিস্তারিত জানতে পারবেন। দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা ১৪ই এপ্রিল ২০১২ তারিখে MLM কোম্পানিগুলো কিভাবে মানুষকে প্রতারনা করে তা নিয়ে একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এটি পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করতে পারেন। MLM বিষয়ক প্রতিবেদন দৈনিক যুগান্তর
আপনাদের সুবিধার্থে প্রতিবেদনটির একটি অংশ এখানে তুলে দিলামঃ
মেধাবী যুবক এম মিজানুর রহমান সোহেল ঢাকায় এসেছিলেন অনেক স্বপ্ন নিয়ে। পড়াশোনা শেষ করে ভালো কোথাও চাকরির প্রত্যাশাও ছিল। কিন্তু ডেসটিনিতে নাম লেখিয়ে তার এখন পথে বসার উপক্রম। পড়ালেখাও তিনি শেষ করতে পারেননি। তার জীবনের রঙিন স্বপ্নগুলো এখন বিবর্ণ হয়ে গেছে। শনিবার যুগান্তর কার্যালয়ে তিনি তার করুণ কাহিনী বর্ণনা করেন।
ডেসটিনির সদস্য হয়ে কিভাবে তিনি প্রতারিত হলেন তার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। সোহেল বলেন, ২০০৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে অনার্স পড়তে তিনি ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। ভর্তির পর পরই তার এক বন্ধু তাকে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের এমএলএম কোম্পানির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখায়। ওই কোম্পানিটির প্রশিক্ষণে জাদুর মতো চটকদার লোভনীয় কথায় তিনি ডেসটিনির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ২০০৬ সালের ৩১ আগস্ট ২৭৮তম স্টেটমেন্টে ডেসটিনির ঢাকা-৭ অফিসে তিনটি সেন্টার নিয়ে ডেসটিনির সদস্য হন। তার সেন্টারের সিআইডি নাম্বারগুলো হচ্ছে ১১৫৪৮২০, ১১৫৪৮২১, ১১৫৪৮২২। ডেসটিনিতে সদস্য হওয়ার পর তার অফলাইন লিডাররা নিজেদের পকেট ভারি করার জন্য তাকে নানাভাবে ব্যবহার করতে থাকেন। প্রথমে তাকে সপ্তাহে ছয় থেকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিলে মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করা যাবে বলে লোভ দেখায়। পড়াশোনা ও চাকরির পাশাপাশি তিনি ডেসটিনিতে খণ্ডকালীন কাজ শুরু করেন। কিন্তু খণ্ডকালীন সময়ে তার প্রথম আট মাসে আয় হয় মাত্র ১৮শ’ টাকা। এরপর অফলাইনরা তাকে পরামর্শ দেন, চাকরিটা ছেড়ে পূর্ণ সময় দেয়ার এবং তাতে মাসে তার ৫০ হাজার টাকা আয় নিশ্চিত হবে। তিনি চাকরিটা ছেড়ে দেন। কিন্তু রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম করেও তার ভাগ্য খোলেনি। বরং পুরো এক বছর সময় দিয়ে ধার-দেনা করে প্রায় ৪৮ হাজার টাকা খরচ করে ১২ হাজার টাকা আয় করেন। অফলাইনরা তাকে অভয় দিয়ে বলেন, সবারই প্রথম প্রথম বেশি সময় লাগে, কিন্তু জ্যাম ছেড়ে গেলে দেখবেন প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন।
এদিকে তার বাবা-মা বারবার ডেসটিনি করতে বারণ করলেও তাদের কথা অগ্রাহ্য করে তিনি মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার প্রতিশ্র“তি দেন। এতে বাবা-মা তাকে টাকা-পয়সা দেয়া বন্ধ করে দেন। এদিকে চাকরি ছেড়ে দেয়ায় তিনি অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। কলেজের কয়েকজন বন্ধুর কাছ থেকে ঋণ করে ডেসটিনিতে প্রায় তিন লাখ টাকা বিনিয়োগ করে দুই বছরে সাত সাইকেল তথা প্রায় ৮৮ হাজার টাকা আয় করেন। ডেসটিনিতে এক ট্রেনিংয়ে অফলাইনরা বলেন, যারা পড়াশোনা করছেন তারা তো পড়াশোনা শেষ করে টাকাই আয় করবেন। সেই টাকা যদি এখনই আয় করতে পারেন, তাহলে পড়াশোনা করে কি হবে? বাংলাদেশে পড়াশোনার কি কোন ভাত আছে? শিক্ষিত বেকাররা ক্রাইম করে। তাই আপাতত পড়াশোনা করে সময় নষ্ট না করে এখানে সিরিয়াসলি সময় দিলে মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করা অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে যাবে। তাদের কথামতো সোহেল পড়াশোনাও বন্ধ করে দেন। সোহেল আরও বলেন, ডেসটিনির কোন সদস্য যাতে ডেসটিনি ছাড়তে না পারে সে জন্য তারা নানা কৌশল গ্রহণ করে। প্রথমত, অন্য সব আয় থেকে সদস্যদের সরে আসতে বাধ্য করে। এরপর বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে তা খরচ করাতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। যাতে করে ঋণের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য ডেসটিনির কাজের গতি বৃদ্ধি পায়। এরপর পড়াশোনা বা শখের কোন কাজ থাকলে সেখান থেকেও অব্যাহতির ব্যবস্থা করা হয়। যেন ডেসটিনিতে ফুলটাইম সময় দিতে বাধ্য হয়। বিয়ে না করে থাকলে বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে বিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। যাতে ঘাড়ে সংসার চালানোর তাগিদ থেকেই ডেসটিনির কাজের প্রতি আগ্রহ বেশি হয়।

MLM ব্যবসার প্রতারনা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কগুলো ঘুরে আসতে পারেন।
আসুন, আমরা সবাই এই প্রতারণামূলক ব্যবসা সম্পর্কে নিজে সতর্ক হই এবং অপরকে সতর্ক করি। টিউনটি পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
(তথ্য সূত্র- টেক ব্লগ ও বিভিন্ন সংবাদপত্র মাধ্যম)

No comments:

Post a Comment