Monday, July 30, 2012

একজন গেমারের আত্মজীবনী পড়ুন :P (রম্য গল্প)



“কিয়া বাতাওউ মেরে দিল কা হাল
পাকায়া থা মুরগী হো গায়া ডাল ”
মাহবুব আলীর মুরগী কিভাবে ডাল হইল সেই ঐতিহাসিক কাহিনী:P:P:P:P:P:P
মাহবুব আলী তখন মেডিকেলের ৩য় বর্ষের ছাত্র। মেডিকেলে ৩য় বর্ষ মানে বান্ধবীদের নিয়ে ঘুরতে যাবার, ধুমায়ে আড্ডা মারার, সারারাত তাস পিটানোর অফুরন্ত সময়।মাহবুব আলীর আবার অনেক গুণ:P:P। সে একাধারে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, মঞ্চ নাটক,রাজনীতি, এবং মাঝে মাঝে তাবলীগ ও করচে। আর নেশার বস্তু হিসেবে গ্রহন করেচে, ভয়ঙ্কর এক মরন নেশা X(X(X(X(
কম্পিউটার গেমস
দিন রাত গেম খেলে মাহবুব আলী। কল অফ ডিউটি, কমান্ডোস, ফিফা-০৬/০৭, আনরিয়েল টুর্নামেন্ট, পেইন কিলার, ম্যাক্স পেইন———— মানি , কোন গেম আর বাদ নাই। ক্লাসের খবর নাই। পরীক্ষার সময় বন্ধুরা তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায়। এই রকম অবস্থা।
এই ভাবে সুখে শান্তিতে:D:D:D:D দিন কেটে যাচ্ছিলো
হঠাৎ একদিন মাহবুব আলী খবর পেল, তার দোস্ত ফারদিল ওরফে ফেদু নতুন কম্পিউটার কিনেছে। খুশীতে বাক বাকুম করতে করতে মাহবুব আলী তৎক্ষণাৎ রওয়ানা দিল ফেদুর বাসায়।
বাবা মায়ের আদরের সন্তান ফেদু আবার হোস্টেলে থাকতে পারে না। ফেদুর মায়ের ভাষায়, ” আমার বাবুটা হোস্টেলে থাকতে পারে না। কষ্ট হয়।” X(X(X(X(
সবাই মনে মনে হাসে- শালায় এতো বড় দামড়া, তাও আবার ক্যাডেট, সে নাকি বাবু:P:P সে নাকি হোস্টেলে থাকতে পারে না। পুরা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়া থাকে। সবার অবশ্য সুবিধাই হয়েচে।:D:D:D:D:D:D কি সুবিধা সেটা পরে বলচি।
ফেদুর বাসায় গিয়ে মাহবুব আলী দেখে ফেদু তার নতুন কম্পু সেট করচে। সেখানে উপস্থিত শাওন, তানভির, মুগ্ধ, নাকিব । ফেদুর কম্পু সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে নিতে বুজতে পারল, সাম্প্রতিক ছেঁকা খাওয়া ভুলতে ফেদুর এই আয়োজন। চুক চুক করে সমবেদনা জানিয়ে, এবং নিজের মনের একটা গোপন খায়েশ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে ফেদুকে বলল, ” দোস্ত, এক কাম করি। আমার কম্পু টা নিয়ে আসি তোর বাসায়। ল্যান এ গেম খেলুম:D:D:D:D:D ”
বলার আগেই দেখি ফেদু রাজী।
মাহবুব আলীর জীবনের এক ভুল ডিসিশনX((X((X((X((
শুরু হল গেম উৎসব। সাথে যোগ দিল, নাকিব, শাওন, সামসু, মুগ্ধ তানভীর আরও অনেকে।।
দিনরাত চলছে গেম খেলা। প্রতিদিন টুর্নামেন্ট। আজ ফিফা তো কাল কল অফ ডিউটি। আজ কল অফ ডিউটি তো কাল আনরিয়েল টুর্নামেন্ট। বলাই বাহুল্য মাহবুব আলীর সেখানে চরম পারফরমেন্স। আর বাজী ধরা ধরি তো আছেই। বাজী ধরে কত সুপ চাইনিজ আর কড়াই মাংস যে খাওয়া হইসে তার হিসাব নাই।
বিকাল থেকে শুরু করে ভোর রাত অব্দি চলে খেলা। ভোরে ঘুম দিয়ে সবাই উঠে দুপুর ২ টায়। ফেদুর বাসায় এক বৃদ্ধ লোক থাকত। তার দায়িত্ব ছিল ফেদু বাবুকে :P:P যত্ন করা, রেধে খাওয়ানো। সদা হাস্যময় সেই আঙ্কেল হাসি মুখে মাহবুব আলী অ্যান্ড গং দের খাওয়ানোর দায়িত্ব নিলেন। :D:D:D
দিন যায়, মাস যায় ———–
কোথায় ক্লাস কোথায় পরীক্ষা :D:D:D
কিন্তু একদিন /:)/:)/:)/:) মাহবুব আলীর এই মধু চন্দ্রিমা একদিন হঠাৎ করেই শেষ হয়ে গেল।
কল অফ ডিউটি ডেথ ম্যাচ চলছে। পিন ড্রপ সাইলেন্স। সবার মাঝে টান টান উত্তেজনা। স্নাইপার রাইফেল নিয়ে মাহবুব আলী শত্রুকে গরু খোজা খুজছে।
হঠাৎ কে যেন গুলি করল প্রচণ্ড শব্দে /:)/:)/:)/:)/:)
কোত্থেকে গুলি করল ধরতে পারে না মাহবুব আলী। হার্ট বিট বেড়ে যায় মাহবুব আলীর। হাত ঘামে, মুখ গলা শুকিয়ে আসে তার। কয়েক মুহূর্ত পর আবার গুলি,এবার আরও কাছে থেকে এবং আরও ভয়ঙ্কর ভাবে। মুহূর্তে মাহবুব আলীর যেন একটা হার্ট বিট মিস করল। তারপর আরও একটা, তার পর আরও একটা:-/:-/:-/:-/:-/ মাহবুব আলীর মনে হল সে যেন পড়ে যাচ্ছে গুলি খেয়ে। :-/:-/:-/:-/:-/:-/
পড়ে মাহবুব আলী ঠিকই গেল, তবে রাইফেল ছেড়ে নয়, মাউস এবং কিবোর্ড ছেড়ে। :((:((:((:((:((
বন্ধুরা তাকে নিয়ে গেল, করোনারি কেয়ার ইউনিট এ। ই সি জি করার পর
খবর দেয়া হল প্রফেসার অফ কারডিওলজি কে। বলা হল স্যার কে বলা হল ৩য় বর্ষের এক মেধাবী B-)B-)B-) ছাত্র ভর্তি হয়েছে। স্যার একটু তাড়াতাড়ি এসে দেখে যান।
স্যার আসলেন দ্রুতবেগে। মোস্ট ওয়ান্টেড এর রেজর এর মতো গাড়ী চালিয়ে B-)
তারপর মাহবুব আলীর ই সি জি দেখলেন। গভীর মমতা নিয়ে প্রিয় ছাত্র(??) কে পরীক্ষা করলেন এবং বললেন, ” তোমার তো হার্টে কোন সমস্যা নাই রে বাপু। বিড়ী সিগারেট খাও??” মাহবুব আলীর উত্তর,” মাঝে মাঝে খাই স্যার।” স্যার তখন একটা সিগারেটে আগুন ধরাতে ধরাতে বললেন ,” অসব না খাওয়াই ভালো।”:P:P:P:P:P
ঘুমের ঔষধ নিয়ে হাসপাতাল থেকে বিদায় নেয় মাহবুব আলী। তারপর দিন শুকনা মুখে কম্পু নিয়ে মাহবুব আলী ফেদুর বাসা ত্যাগ করে। গেমিং ক্যারিয়ার এর ওটাই ছিল শেষ ।।
মাহবুব আলীর গেমিং ক্যারিয়ার এর সমাপ্তি ঘটলেও। এখনও মাহবুব আলীর ওই দিন গুলার কথা মনে পড়ে:(( :((:((:((:((:((:((:((:((:((:((:((:((:((:((
বুকের গভীর থেকে উঠে আসে দীর্ঘশ্বাস।।
গল্পটি এই গ্রুপ থেকে কালেক্ট করা হয়েছে।
কমেন্ট করতে ভুলবেন না। সবাইকে ধন্যবাদ। :)