
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে মার্কিন গবেষকেরা বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে, এমন কম্পিউটার ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যা মানুষের বুদ্ধিমত্তার কাজে লাগানো যায়। মানুষের ক্ষেত্রে আবেগ শনাক্ত করাটা বুদ্ধিমত্তার একটি বড় বৈশিষ্ট্য। কৃত্রিম বুদ্ধিবৃত্তিক যন্ত্রের মধ্যেও এ বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন, যাতে মানুষের সঙ্গে ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমানেরা। আবেগ বুঝতে পারলে এসব যন্ত্র ভাষা বুঝতে পারবে আর ভাষা বুঝতে পারলেই জ্ঞানে ঋদ্ধ হবে রোবট।
মানুষকে ছাড়িয়ে যাবে যন্ত্র
বর্তমান বিশ্বের কিংবদন্তি তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং মনে করেন, বুদ্ধিমত্তার দিকে থেকে যন্ত্র অনেক এগিয়ে যাবে। মানুষের চেয়ে যন্ত্রের বুদ্ধি হবে বেশি। যেকোনো কিছুতেই নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে এবং ভবিষ্যতে মানুষের জন্য বিপদই ডেকে আনবে। সম্প্রতি এইচবিওর এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। হকিং বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমান যন্ত্রের সাময়িক প্রভাব নির্ভর করে এর নিয়ন্ত্রণ কর্তার মর্জির ওপর কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে একে আদৌ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কি না, সে বিষয়টি রীতিমতো অনিশ্চিত ও আশঙ্কাজনক। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক বিশেষজ্ঞদের ওপর মোটেও আস্থা নেই তাঁর। তা ছাড়া এ বিষয়ে এখনো তেমন গবেষণা হয়নি বলেও মনে করেন তিনি।
স্পেসএক্স নামের মহাকাশযান নির্মাতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এলন মাস্কও সম্প্রতি এক সাক্ষাত্কারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগও করেছেন। তাঁর ধারণা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে হলিউডের ছবিতে দেখানো টার্মিনেটর, স্কাইনেটের মতো মারাত্মক কিছু বের হয়ে আসবে। আমাদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে বলেও মনে করেন তিনি। এ ছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যেন অপব্যবহার না হয়, সেখানে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। না হলে মানুষের জন্য বিপদ ঘটতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমানরা কী মানুষের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে? এ প্রশ্নের জবাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ রে কুর্জওয়েইল বলেন, ‘আমরা আধুনিক প্রযুক্তির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কথা বলছি। মঙ্গল গ্রহ থেকে কৃত্রিম কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী এসে আমাদের আক্রমণ করবে তা নিয়ে ভাবছি না। এ বিষয়ে ভাবনার চেয়ে আমরা ভাবছি আমাদের নিজেদের তৈরি কৃত্রিম যন্ত্রগুলো নিয়ে, যা পুরোটাই প্রযুক্তির উন্নয়ন। আমাদের হাতে তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমানেরা কখনো আমাদের বিপক্ষে যাবে না। বর্তমানে যন্ত্র যেমন আমাদের বুদ্ধিমত্তাকে বাড়িয়ে তুলছে, ভবিষ্যতে আরও সহযোগিতা করবে যন্ত্র।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমিটরিতে বসে গুগল বা ফেসবুক তৈরি হয়েছে। এখন আফ্রিকার একটি শিশু ১৫ বছর আগের মার্কিন প্রেসিডেন্টের চেয়েও বেশি তথ্য জানতে পারে। তাই, প্রযুক্তিকে সব সময় দ্বিমুখী তলোয়ার বলা যেতে পারে, যার ভালো-মন্দ দুটো দিকই রয়েছে; তবে ভালোর দিকটাই বেশি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে মানুষের দীর্ঘায়ু দেখার প্রত্যাশা করছেন মার্কিন এই গবেষক।
প্রেম হবে কম্পিউটারের সঙ্গে

টিউরিং টেস্টে পাস করেছে কম্পিউটার

No comments:
Post a Comment